Thursday, August 16, 2012

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষ আধুনিকতার এক অলৌকিক পরিবর্তন ঘটিয়ে আসছে। বিশেষ করে টিনেজার বন্ধুদের এক বিরাট আগ্রহ। কে, কত আধুনিকতা শরীরে জড়িয়ে রাখতে পারে। ওয়েস্টার্ন-অনুকরলের ফলে বাংলার প্রকৃত ঐতিহ্য আমরা আজ হারাতে বসেছি। সে সাথে ধ্বংস করছি আমরা আমাদের সংস্কৃতি। মানুষের কাজ কর্মের পুরানো ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে-বৈজ্ঞানিক প্রভাবের দরুণ। আর এজন্যই আমরা হারাচ্ছি পুরানো অনেক ঐতিহ্য। এটা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শারীরিক পরিশ্রমকে লাঘব করার চেষ্টা। কিন্তু ওয়েস্টার্ন দেশ গুলোর অনুকরলের ফলে প্রকৃত শিল্প, সংস্কৃতি ঐতিহ্য গুলোর খোজ নেই। বর্তমানে বিশ্বায়নের যুগে ওয়েস্টার্ন ভাষা ইংরেজী আন্তর্জাতিক ভাষা। এটাকে কিন্তু ওয়েস্টার্ন বলা যাবে না। কিন্তু যে অনুকরণ গুলো আমাদেরর কোন উকারে না এস ক্ষতি ও অপব্যয় এবং রং তামাসার মাধ্যম হিসাবে উপস্থাপনা করা হয় সেগুলো নিশ্চই অপসংস্কৃতি। যা বাংলাদেশ তথা বাংলা ঐতিহ্যের জন্য মারাত্নক হুমকি স্বরুপ। যদিও ওয়েস্টার্ন দেশ গুলো থেকে আমাদের দেশ বিশ বছর ফিছিয়ে রয়েছে। এতেই এ দেশের অবস্থা এই। তাহলে আগামী বিশ বছর পর দেশের অবস্থা কি হবে তা এখনই অনুমেয়। কে কত আকর্ষনীয় হয়ে অন্যের নিকট উপস্থাপন করবে, এটাইতো আধুনিকতা! P.C College.Bagerhat Facebook আমার এক বন্ধু জিস্ন প্যাণ্টের পায়ের কিছু অংশ কেটে অন্য রঙ্গের সেলাই দিয়ে হিল সু পায়ে বসিয়ে, মারকারি চশমা নাকে বসিয়ে বুকের পশম পৃথিবীকে দেখিয়ে ভিড় ঠেলে পথ চলছিল। মাথায় ছিল পিঠ অব্দি চুল। বুকের উপর মেয়েদের নিকট থেকে ধার করা ওড়না, এক কানে দুল, ডান হাতে চুড়ি দিয়ে পথ চলছি। এই তো আধুনিকতা। অন্য দিকে সেদিন আমি এক কসমেটিক্সের দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ এক হিপ নৌকার মতো মেয়ে এল। দামী পারফিউম কিনতে এসেছে। আমিতো দেখে এক সাগরের কাছে নদীর গন্ধ পেয়েছি। দেখলাম বুকের এক পাশে শুভ্র তিল। অরগেণ্টি কাপড়ের ভেতর স্কীন পাতলা কাপড়ে মোড়ানো। শ্যাম্পু করতে করতে এবং চুলে হিট দিয়ে চুল গুলো হয়ে উঠেছে ঘোড়ার লেম মার্কা। মেকাপ করে চোখের পাতা যেন দুই ইঞ্চি পুরু হয়ে উঠেছে। ঠোটের লিপিস্টিক দিয়ে নিশ্চিই বিভিন্ন রঙ্গের এক বালতি রং গোলা যাবে। চোখের ভ্রু নেই। ৮ ইঞ্চি উচু খুরের হিলের নিচে কিছু পড়লে নিশ্চত ডাক্তার লাগবে। স্যালোয়ারের নিচের দিকে খাট। ধীরে ধীরে তা উপরের দিকে ধাবিত হচ্ছে এবং তা নিচের দিকে বিঘাত খানেক ছেড়া। কামিজের কোমর অব্দি জোড়াহীন। হাটার স্টাইলে পিলে চমকে যায়। এভাবে স্যালোয়ার উপর দিকে ধাবিত হতে থাকলে একদিন না হয় একদিন ইংলিশ প্যাণ্টে রুপান্তরিত হবে। কিন্তু কেন ঐ ওয়েস্টার্ন দেশ গুলোকে অনুসরণ, অনুকরণ। আমরা কি পারি না আধুনিকতার ছোয়া দিয়ে পুরানো ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে? P.C College.Bagerhat Facebook subrosumon@yahoo.com

Sunday, August 5, 2012

লিখনপ্রনালি এবং প্রকাশরীতির সুষ্টতার জন্যে যে কোন ভাষার নিজস্ব বানানরীতি একান্ত অপরিহার্য। আবার, উচ্চারণের সাথে বানানের সামঞ্জস্য থাকাও আবশ্যক। তবে, উচ্চারণ ও বানানে সমতারক্ষা পৃথিবীর কোন ভাষায় সম্ভব হয়নি। কারণ, উচ্চারন প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়, অঞ্চলে অঞ্চলে উচ্চারণে ভিন্নতা দেখা দেয়। এরকম একটি পরিবর্তনশীল বিষয়ের সাথে মিল রেখে বানানে যথার্থ পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। এছাড়াও প্রচীন ও মধ্যযুগে লিপিকারেরা ইচ্ছামতো বানা ব্যবহার করতো। তখন বানানের সর্বজনসম্মত কোন মানরুপ ছিল না। ফলে, বাংলা বানানে বিশৃঙ্খলা আর বানান ভিন্নতা শুরুতেই প্রকট হয়ে দেখা দেয়। উনিশ শতকের প্রারম্ভে, বাংলা গদ্যের উম্মেষগুগে তৎসম শব্দের ক্ষেত্রে সংস্কৃত ব্যকরলের অনুশাসন অনুযায়ী বাংলা বানান নির্ধারিত হয়। কিন্তু অর্ধ-তৎসম, তদ্ভব,দেশি ও বিদেশি ও নানা ধরনের মিশ্র শব্দের ক্ষেত্রে বানানের নৈরাজ্য চলতে থাকে। ফলে, বানান নির্ধারিত হলেও বাংলা বানানের সমতাবিধান সম্ভব হয়নি। তাছাড়া, বাংলা ভাষা ক্রমাগত সাধুরীতির নির্মোক ত্যাগ করে চলিতরুপে পরিগ্রহ করতে থাকে। এমনকি অনেক বাষার মতো বাংলা ভাষার লেখ্য রুপও সম্পূর্ন ধ্বনিভিত্তিক নয়। বাংলা বানানের এই াসুবিধা আর সংঙ্গতি দুরীকরনের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।Facebook তারই অনুরোধে বাংলা বানান সংস্কার এবং বানানরীতি সুনির্দিষ্ট করার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম সক্রিয় ভূমিকা পালন করে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৩৫ সালে রাজশেখর বসুকে সভাপতি এবং চারুচন্দ্র ভট্টাচর্যকে সম্পাদক করে গঠিত বাংলা বানান সংস্কার কমিটির প্রতিবেদন ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হয়। কিন্তু রক্ষণশীল পণ্ডিতগণ ঐ বানান কাঠামোর বিরোধিতা করেন। আবার, কেউ সুনির্দিষ্ট নিয়ম সম্পর্কে ভিন্নমত ব্যক্ত করেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ - শরৎচন্দ্র ঐ সুপারিশ অনুসারে বানান লিখতে সম্মত হলে এবং বিভিন্ন মহল থেকে উত্থাপিত মতামত ও ভিন্নমত বিবেচনায় নিয়ে সামান্য পরিবর্তন করে ১৯৩৭ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্রালয় 'বাংলা বানানের নিয়ম' পুস্তিকার তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশ করে। এ নিয়ম সর্বতোভাবে মেনে না নিলেও পরবর্তীতে প্রকাশিত সকল অভিধানে তা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তারপরেও অনেক ক্ষেত্রে বিকল্প বানানের সমস্যা থেকে যায় বিশ্বভারতী ১৯৩৬-৩৭ সালের দিকে 'চলিত ভাষার বানান' এর নিয়ম প্রণয়ন করেছিল। যার সাথে কোন কোন ক্ষেত্রে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বানানের পার্থক্য ছিল। পরে অবশ্য বিশ্বভারতীর বানানের নিয়মের অনেক পরিবর্তন হয়েছিল।Facebook আশির দশকে আশুনিক মুদ্রণ-প্রযুক্তিকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশে বাংলা বানান সংস্কার ও প্রমতিকরণের নতুন উদ্যোগ শুরু হয়। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাডেমি ১৯৮৭ সালে এ সংক্রান্ত কিছু সংস্কার প্রস্তাব করেন। বাংলাদেশে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ১৯৮৮ সালে বাংলা বানারের সমতা বিধারের একটি নীতমালা প্রণয়ন করে এবং ১৯৯২ সালে তা পুস্তিককারে প্রকাশ পায়। ১৯৯২ সালেই বাংলা একাডেমী কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রণীত বানানরীতি এবং বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক গৃতীত বানানরীতির সমন্বয়ে 'প্রমিত বাংলা বানারের নিয়ম' পুস্তিকটি প্রণয়ন করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামান্য মত-পর্থক্য সত্তেও এ পদক্ষেপের মাধ্যমে সামগ্রিক তৎসম শব্দের বানান মোটামুটি অপরিবর্তিত রেখে এবং অতৎসম শব্দের বানানকে ধ্বনিসংবাদী করে বাংলা বানানের নিয়ম উপস্থাপিত হয়েছে।Facebook